মালয়েশিয়ায় হাইকমিশনের উদ্যোগে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন
বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে মালয়েশিয়ায় ৫০তম সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) মালয়েশিয়ার রয়েল চুলান হোটেলের বলরুমে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে কুয়ালালামপুর প্রতিরক্ষা শাখা।
কমান্ডার রাজনে ইবনে ওয়াহিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এরপর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে নিযুক্ত প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা কমডোর মোস্তাক আহমেদ, (জি), এনপিপি, পিএসসির স্বাগত বক্তব্যে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমগ্র বাঙালি মুক্তিকামী মানুষ সশস্ত্র স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন, তাদের সাথে সশস্ত্র বাহিনীও যোগ দেয়। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ১৯৭১ সালের ২১ নভেম্বর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী একযোগে দখলদার পাকিস্তান বাহিনীর বিরুদ্ধে সুসংগঠিত আক্রমণ করে। ফলে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
কমডোর মোস্তাক আহমেদ বলেন, ফোর্সেস গোল-২০৩০ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকারের এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ।প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মালয়েশিয়া সশস্ত্র বাহিনীর সাথে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নে মালয়েশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং এ সম্পর্ক আরও সুগভীর করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। দেশের প্রতিটি অঙ্গনে এ উন্নয়নের জোয়ার বহমান। ভবিষ্যতেও উন্নয়ের এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে গর্বে মাথা তুলে দাঁড়াবে।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার সেনাপ্রধান জেনারেল তানশ্রী দাতুক জমরুজ বিন মোহাম্মদ জেইন প্রধান অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারওয়ার ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, প্রতিরক্ষা এটাচে, মালয়েশিয়া সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সুশীল সমাজ এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির ব্যক্তিবর্গসহ দেড় শতাধিক অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. গোলাম সারোয়ার তার বক্তব্যে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের জাগরণ এবং প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কথা ব্যক্ত করেন। বিশেষ করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ আজ সর্বজন স্বীকৃত। এ অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে তিনি উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
তার বক্তব্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সাময়িক আশ্রয় দেওয়ার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের উদার মানবিকতার বিষয়টি ফুটে ওঠে। করোনা মহামারির দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের বিষয়টিও তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে অতিথিরা নৈশ ভোজে অংশগ্রহণ করেন।নৈজভোজ চলাকালীন ‘উদীয়মান বাংলাদেশ এবং সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়ন, সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ অনুশীলন’ এবং সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২১ উপলক্ষে নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়।