মালয়েশিয়ান ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে আরো বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: গোলাম সারওয়ার। শুক্রবার মালয়েশিয়ার স্থানীয় টেলিভিশন অ্যাস্ত্রো আওয়ানি'তে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ আহ্বান জানান। টেলিভিশনটি'র জনপ্রিয় উপস্থাপক রিজাল জুলকাপলি'র উপস্থাপনায় 'আওয়ানি গ্লোবাল' নামে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে যোগ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে কথা বলেন বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দীপাক্ষিক সম্পর্ক, ব্যাবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শ্রমবাজারসহ বিভিন্ন ইস্যুতে।

বাংলাদেশের ধারবাহিক উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি'র) ২০১৯ সালে বাংলাদেশকে বিনিয়োগের অন্যতম উপযোগী দেশ হিসাবে ঘোষণা করা। বর্তমানে বিশ্বের অনেক দেশের বিনিয়োগের কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার অনেক বড় বড় কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে উল্লেখ করে, দু'দেশের বানিজ্যিক সম্পর্ক প্রসার হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিদেশি বিনিয়োগে মালয়েশিয়ার অবস্থান নবম উল্লেখ করে আরো বিনিয়োগের জন্য ব্যাবসায়ীদের আহ্বান জানান হাইকমিশনার। 

ভৌগলিক অবস্থানের কারনে এশিয়ায় বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে 'ভিশন ২০৪১ প্রকল্পে'র মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নত বিশ্বের কাতারে শামিল হতে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন হাইকমিশনার গোলাম সারওয়ার। 'বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার দ্বীপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন' শিরোনামে'র এ অনুষ্ঠানে হাইকমিশনার বলেন, দু'দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ'কে স্বাধীন, সার্বভৌম দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেয় মালয়েশিয়া। সেই থেকে দু'দেশের সম্পর্ক সুদৃঢ়। ২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। 

শ্রমবাজার ইস্যুতে তিনি বলেন,ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে কর্মী, জমি ও মুলধন প্রয়োজন যার মধ্যে কর্মী'র জন্য বাংলাদেশসহ বেশ কিছু দেশের উপর তারা নির্ভরশীল। এই শ্রমবাজারে সততা, কর্মনিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশী কর্মীরা নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে উল্লেখ করে হাইকমিশনার বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে বাংলাদেশী কর্মীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বেশিরভাগ মালিক কর্মী হিসাবে বাংলাদেশীদের চায়। তবে শ্রমিক আসার ক্ষেত্রে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকায় অনেক সময় বিনিয়োগ বাধাগ্রস্থ হয় বলে মন্তব্য করেন এ কূটনীতিক।

এসময় বাংলাদেশী স্বনামধন্য কোম্পানি আকিজ গ্রুপ সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় বিনিয়োগ করেছে উল্লেখ করে দু'দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে এই বিনিয়োগ আরো বাড়ানোর উপর তাগিদ দেন হাইকমিশনার। 

গোলাম সারওয়ার বলেন, বর্তমানে ২৮ হাজার বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে মালয়েশিয়ায়। তাদের মাধ্যমে দু'দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধন বিস্তৃত হচ্ছে। এছাড়া উপযোগী ও প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় প্রতি বছর দেড় লাখেরও বেশি বাংলাদেশী মালয়েশিয়া ভ্রমনে আসে বলে জানান হাইকমিশনার। এসময় বিশ্বজুড়ে মহামারি আকার ধারন করা চলমান কোভিড-১৯ মোকাবেলায় মালয়েশিয়া সরকারের প্রশংসা করে হাইকমিশনার বলেন বর্তমানে এটি মোকাবেলা করাই সবচে' বড় চ্যালেঞ্জ।