মালয়েশিয়ায় উদ্বোধন হলো ই-পাসপোর্ট সেবা
মালয়েশিয়ায় উদ্বোধন হলো প্রবাসী বাংলাদেশিদের বহুল প্রতীক্ষিত ই -পাসপোর্ট সেবা । গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল ২০২৪ ) রাজধানী কুয়ালালামপুরের সাউথগেট কমার্শিয়াল সেন্টারে আউটসোর্সিং প্রতিষ্ঠান EXPAT SERVICES (KUALA LUMPUR) SDN. BHD. এর অফিসে সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ সেবা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। প্রধান অতিথির নিকট হতে একজন নবজাতক ও দুই জন তরুণ বাংলাদেশীর আবেদন স্লিপ প্রদানের মাধ্যমে ই -পাসপোর্ট সেবা কার্যক্রম শুরু করা হয়। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: শামীম আহসান।
সুরক্ষা সচিব মোঃ আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ মাহেন্দ্রক্ষণে প্রবাসী বাংলাদেশীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে ২০২০ সালে প্রথম ই -পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হয়। এ পাসপোর্টে রয়েছে ৩৮ ধরনের নিরাপত্তা কোড। এখন পর্যন্ত এক কোটি ত্রিশ লাখ ই -পাসপোর্ট বিতরণ করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট চালু করা হলো । তিনি আশা প্রকাশ করেন এর মাধ্যমে মালয়েশিয়াতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পাসপোর্ট সেবার মান বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর ন্যায় স্মার্ট ও দ্রুততর হবে এবং এক্ষেত্রে পাসপোর্ট সেবায় গুনগত পরিবর্তন আসবে। এ পাসপোর্টের মাধ্যমে উন্নত দেশের নাগরিকদের মত বাংলাদেশিরাও শীঘ্রই নিজে স্ক্যান করে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন। এতে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে এবং বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশ হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে।
জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে হাইকমিশনার মোঃ শামীম আহসান তার বক্তব্যে বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশী বসবাস করেন, সংখ্যার বিচারে যা সৌদি আরবের পর বিশ্বে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কমিউনিটি। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত ই-পাসপোর্ট প্রত্যাশীরা হাইকমিশনে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম শুরুর বিষয়ে ক্রমান্বয়ে দাবী জানিয়ে এসেছেন যা বাস্তবে এখানে একটি বড় দাবীতে পরিনত হয়েছিল।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রবাসী বান্ধব’ নীতির কারণে বাংলাদেশ সরকার মালয়েশিয়ায় বসবাসরত ই-পাসপোর্ট সেবা প্রতাশিদের এই বড় দাবীটি অনুধাবন করে অতিদ্রুত “ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের” মাধ্যমে বাংলাদেশ হাইকমিশন কুয়ালালামপুর, মালয়েশিয়াতে ই-পাসপোর্ট সেবা প্রদানের জন্য সম্পূর্ণ নতুন একটি পাসপোর্ট ভবনে ই-পাসপোর্টের সরঞ্জামাদি বাংলাদেশ হতে আনয়ন করে ই-পাসপোর্টের সকল ওয়ার্ক স্টেশন সফলভাবে স্থাপন সম্পন্ন করা হয়, যা আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন করা হলো। এ সময় হাই কমিশনার মালয়েশিয়ার প্রবাসীদের অভিনন্দন জানান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে “ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প” এর উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
মালয়েশিয়ায় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু করায় মালয়েশিয়ার প্রবাসী বাংলাদেশীরা গভীর সন্তোষ প্রকাশ করেন।
সবশেষে প্রধান অতিথি প্রবাসী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
হাইকমিশনের কাউন্সেলর ( ভিসা ও পাসপোর্ট )মিয়া মোহাম্মাদ কেয়ামউদ্দিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্প এর প্রকল্প পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহম্মদ নুরুস ছালাম, পিএসসি। এছাড়াও হাইকমিশনের মিনিস্টার ও ডেপুটি হাইকমিশনার খোরশেদ আলম খাস্তগীর, এ প্রজেক্টের ডেপুটি প্রোজেক্ট ডিরেক্টর লেফটেনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ ফয়সাল, পিএসসি, ডিভিশনাল পাসপোর্ট এবং ভিসা অফিস, চট্টগ্রাম এর পরিচালক মোঃ সাইদুল ইসলাম,
EXPAT SERVICES এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক গিয়াস আহমেদ , এনবিএল মানি ট্রান্সফার, মালয়েশিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা , সিবিএল মানি ট্রান্সফার এসডিএন বিএইচডি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা , অগ্রণী রেমিট্যান্স হাউজ এসডিএন বিএইচডি এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা , বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের মালয়েশিয়া কান্ট্রি ম্যানেজারসহ মালয়েশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসী কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।