মালয়েশিয়ায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করলেন কৃষিবিদ মামুন

পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিজেআরআই) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মো. আল-মামুন। মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়া থেকে কৌলিতত্ত্ব ও প্রজনন বিষয়ে গবেষণা করে এ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। তার পিএইচডি গবষেণা তত্ত্বাবধান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এগ্রিকালচার অ্যান্ড ফুড স্কিউরিটির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রাফি ইউসুফ।
বিএআরসি এনএটিপি ফেজ-২ বৃত্তির আওতায় কৃষিবিদ আল-মামুন’র পিএইচডি গবষেণার বিষয় ছিল জেনেটিক বৈচিত্র্য ও ডায়ালেল ক্রসের মাধ্যমে কেনাফ মিউট্যান্ট হাইব্রিডের বিকাশ। এর আগে তিনি ২০০৪ সালে শেরে বোংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসিএজি (অনার্স) ও ২০০৮ সালে কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
একাডেমিক কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মালয়েশিয়া (বিএসইউএম) থেকে বেস্ট স্টুডেন্টস্ অ্যাওয়ার্ড- ২০২১ গ্রহণ করেন কৃষিবিদ আল-মামুন। একাডেমিক সফলতার পাশাপাশি তার পিএইচডি গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে ইতোমধ্যেই সাতটি গবষেণা পান্ডুলিপি ‘হাই ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে এবং আরও চারটি পান্ডুলিপি বিভিন্ন জার্নালে পর্যালোচনাধীন রয়েছে।
এছাড়া কৃষিবিদ আল-মামুনের পিএইচডি গবেষণা থেকে উদ্ভাবিত হাইব্রিড কেনাফের নয়টি উচ্চফলনশীল লাইন থেকে নতুন জাত অবমুক্তকরণের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ান নিউক্লিয়ার এজেন্সি বর্তমানে কেলান্তান ও তেরেঙ্গানু রাজ্যে বহুস্থানিক পরীক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার তহবিল প্রদান করেছে মালয়েশিয়ার জাতীয় কেনাফ এবং তামাক র্বোড (এলকেটিএন)।
কৃষিবিদ আল-মামুন ১৯৭৯ সালে বরগুনা জেলার বামনা উপজলোয় জম্মগ্রহণ করেন। আলহাজ্ব মো. আশ্রাফ আলী হাওলাদার ও মোছা. সেলিনা বেগমের সন্তান তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই পুত্র সন্তানের বাবা। শান্ত, সরল ও সদালাপি তরুণ এ বিজ্ঞানী ২০০৪ সাল থেকে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মরত রয়েছেন।
আল-মামুনের গবেষণায় অভিজ্ঞতার আলোকে ২০১৭ সালে বিজেআরআই কেনাফ-৪ (লাল কেনাফ), বিজেআরআই মেস্তা-৩ (মসৃণ মেস্তা) ও ২০২২ সালে বিজেআরআই মেস্তা-৪ (সবজি মেস্তা-২) নামে তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবিত হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত জাতসমূহ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ও পূবের্র জাতসমূহ থেকে কৃষকের নিকট অধিক পছন্দনীয়।
জাত উন্নয়ন ও বীজ গবেষণায় উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি কৃষিবিদ আল-মামুন একজন লেখক ও প্রাবন্ধিকও। তার প্রকাশিত জনপ্রিয় কৃষিবিজ্ঞান বিষয়ক প্রবন্ধের সংখ্যা সত্তরের উপরে। তিনি জাতীয় দৈনিক ছাড়াও মাসিক কৃষিকথা, কৃষিকাগজ ও উন্নয়ন বির্তকসহ বিভিন্ন জার্নালের নিয়মিত লেখক।
দেশে-বিদেশে তার প্রকাশিত গবেষণা প্রবন্ধের সংখ্যা ৩৬টি এবং প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৩টি। এছাড়া দীর্ঘদিন যাবত তিনি আর্ন্তজাতিক বিভিন্ন জার্নালের পর্যালোচক ও সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি একজন সফল সংগঠক হিসেবে দেশে-বিদেশে বহু সোসাইটি ও পেশাজীবি সংগঠনের সক্রিয় সদস্য।
মালয়েশিয়ায় অবস্থানকালে আল-মামুন ইউপিএম ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও তৃত্বীয়বারের মতো বাংলাদেশি স্টুডেন্টস ইউনিয়ন মালয়েশিয়ার সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়া তিনি ২০০৭-০৮ সালে লায়ন্স ক্লাবস ইন্টারন্যাশনাল তত্ত্বাবধানে লিও জেলা ৩১৫বি১ এর সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।