মালয়েশিয়ায় ‘আগামীর বাংলাদেশ কেমন দেখতে চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা
মালয়েশিয়ায় ‘আগামীর বাংলাদেশ কেমন দেখতে চাই’ শীর্ষক আলোচনা সভা এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুয়ালালামপুরের জি টাওয়ারে ১১ আগস্ট বাংলাদেশি ছাত্র জনতা ঐক্য ফোরাম, মালয়েশিয়ার আয়োজনে আলোচনা সভা, শহীদদের স্মরণ ও স্বাধীনতা উদযাপন অনুষ্ঠানে দেশ গঠনে পজিটিভ ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে সংগঠনটি।
বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ গঠনে নতুন প্রজন্মের দায়িত্ব ও ভূমিকা নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ হিসেবে কাজ করতে উদগ্রীব এ সংগঠনটির অনুষ্ঠানে সুরাইয়া নাহার ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে শিক্ষক, ছাত্র, সাংবাদিক এবং পেশাজীবীরা তাদের মূল্যবান মতামত প্রকাশ করেন।
অনুষ্ঠানটিতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সানওয়ে ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশ প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান। এছাড়াও বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার সহকারী অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন মাহি ও ড. মোহাম্মদ হাবীবুল্লাহ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. আল মামুন, মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক সহকারী অধ্যাপক ড. নিয়াজ মোরশেদ এবং ইউকেএমের সিনিয়র লেকচারার ড. মোহাম্মদ খান সোবায়েল বিন রফিকসহ অনেকেই।
প্রধান আলোচকের আলোচনায় ড. সাইদুর রহমান বলেন, আগামীর বাংলাদেশকে একটি আধুনিক, শিক্ষা ও প্রযুক্তিনির্ভর দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। দেশের উন্নয়নের জন্য শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, যেখানে প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ পাবে।
এছাড়াও আমন্ত্রিত বিশেষ অতিথিরা আলোচনায় বলেন, বাংলাদেশের সমাজে সমতা, ন্যায়বিচার এবং মানবাধিকারের প্রতিষ্ঠা খুবই জরুরি। এর জন্য নতুন প্রজন্মকে সচেতন এবং সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল হতে হবে।
তারা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ এবং উন্নত সমাজ গড়তে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জাতির উন্নয়নে শিক্ষার পাশাপাশি নৈতিকতা এবং সামাজিক মূল্যবোধের গুরুত্বও অপরিসীম।
অনুষ্ঠানে ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্যে বক্তব্য দেন আলমগীর চৌধুরী আকাশ, মাহিন মোস্তাফিজ, মো. ঈসা রুহুলুল্লাহ, মো. আরিজ উলফি মিথুন, মোহাম্মদ লিটন, মোহাম্মদ মারুফ ও সুমাইয়া তাবাস্সুম উষা।
পেশাজীবীদের মধ্যে হুমায়ুন কবির হিমেল, মুবিন ভূঁইয়া, মাহাবুব আলম শাহ এবং সাংবাদিকদের মধ্যে মো. সোহান আগামীর বাংলাদেশ নিয়ে তাদের মতামত শেয়ার করেন। তারা দেশের জন্য একটি সুখী, সমৃদ্ধ এবং ন্যায়বিচারপূর্ণ ভবিষ্যতের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত এবং বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। কবিতা আবৃত্তির মধ্যে দেশপ্রেমের সুর তুলে ধরেন রেবেকা সুলতানা জেরিন ও জয়নাবা রাত্রী।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আলমগীর চৌধুরী আকাশ এবং সমাপনী বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের সভাপতি সুরাইয়া নাহার ইয়াসমিন। বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে একটি ভিডিও প্রদর্শন করা হয় এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া পরিচালনা করেন আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় মালয়েশিয়ার সহকারী অধ্যাপক মহিউদ্দিন মাহি।
এটি ছিল একটি স্মরণীয় এবং চিন্তাশীল অনুষ্ঠান যা বাংলাদেশের নতুন এই স্বাধীনতার নবীন দৃষ্টিভঙ্গি এবং দেশের উন্নয়নের প্রতি মানুষের দায়িত্বকে নতুনভাবে চিন্তা করার সুযোগ দিয়েছে। অনুষ্ঠানে আগত সবাই আয়োজক কমিটিকে ধন্যবাদ জানান এ রকম একটি চমৎকার আলোচনা সভার আয়োজন করার জন্য।
আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আজকে শিক্ষক, ছাত্র এবং পেশাজীবীরা নতুন বাংলাদেশ নিয়ে তাদের যে স্বপ্ন তুলে ধরেন তার সারমর্ম একটি প্রস্তাবনা আকারে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে পাঠানো হবে যেন দেশের পলিসি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
বাংলাদেশি ছাত্র জনতা ঐক্য ফোরাম মালয়েশিয়া একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে সামনের দিনগুলোতেও দেশ গঠনে পজিটিভ ভূমিকা রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।