প্রবাসে সাংবাদিকতা : আমার দেখা মোহাম্মদ আবদুল কাদের

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটির সুখ-দুঃখ, আচার-অনুষ্ঠানের খবরাখবর স্বদেশী মিডিয়ায় প্রচার-প্রকাশে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে একঝাঁক প্রবাসী সাংবাদিক। কেবল কমিউনিটির খবরাখবর নয়, বিদেশি কর্মীদের জন্য মালয়েশিয়া সরকারের নানা আইনকানুনের নিত্যনতুন তথ্য, ঘোষণা ও খবর বাংলাদেশি মিডিয়ায় তুলে ধরেন প্রবাসী সাংবাদিকেরা। প্রবাসে কর্মের পাশাপাশি কেউ শখে, কেউ লেখালেখির নেশা থেকে প্রবাসে সাংবাদিকতার সাথে জড়িত।
মালয়েশিয়ায় প্রবাসী সাংবাদিকদের মধ্যে প্রথম দিকে প্রিণ্ট ও অনলাইন মিডিয়ায় মালয়েশিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করা শুরু করে সবাই। ২০১৫ সাল থেকে মালয়েশিয়ায় টেলিভিশন সাংবাদিকতায় পুরোদমে কাজ করছেন বেশ কয়েকজন প্রবাসী সাংবাদিক। মোস্তফা ইমরান রাজু মোহাম্মদ আবদুল কাদের, কায়সার হামিদ হান্নান, ওয়াহিদ সোহান, শাহাদাত হোসেন, আহমাদুল কবির, জহিরুল ইসলাম হিরন, মোহাম্মদ আলী, আশরাফুল মামুন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।এছাড়া মালয়েশিয়ায় টেলিভিশন সাংবাদিক হিসাবে কাজ করে দেশে ফিরে এসেছেন শামসুজ্জামান নাঈম, খন্দকার মোস্তাক রয়েল শান্ত প্রমূখ।
উপরোল্লিখিত নামগুলোর মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে বাংলাদেশের টেলিভিশনে সবচেয়ে বেশি সংবাদ যিনি পাঠান তিনি হলেন মোহাম্মদ আবদুল কাদের। প্রবাসে সাংবাদিকতার শুরু থেকে মালয়েশিয়া প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন দেশের অন্যতম জনপ্রিয় নিউজ চ্যানেল সময় টিভিতে। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় কাজ করতে গিয়ে তিনি একেধারে রিপোর্টার ও ক্যামরাপারসন। প্রবাসিদের সুখ, দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনার নানা প্রতিবেদনের পাশাপাশি নিজেই বিশাল ভিডিওক্যামরা নিয়ে দৌঁড়ান বাংলাদেশ কমিউনিটির নানা অনুষ্ঠানে।
টেলিভিশন সাংবাদিকতায় ভিডিও ধারণ অন্যতম একটি কাজ। একাজে ভালো ও সর্বাধুনিক ক্যামরার ব্যবহার প্রয়োজন। তা-ও দেখিয়েছেন আবদুল কাদের। পুরোদস্তুর একজন টেলিভিশন সাংবাদিক তিনি। প্রবাসে সাংবাদিকতা পেশা বা নেশা যা-ই হোক, সাংবাদিকতায় যে ক্রমাগত মানোন্নয়নের দিকে সচেষ্ট থাকতে হয়- সে ব্যাপারে সদাগতিশীল তিনি।

নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা কাজ করে তাঁর ভিতরে। শেখার, জানার, বোঝার আগ্রহ প্রবল। সেটা খুবই ভালো দিক তাঁর। করোনা মহামারিকালেও বসে নেই আবদুল কাদের ও তাঁর সতীর্থ প্রবাসী সাংবাদিকেরা। মহামারির প্রথম দিকে মালয়েশিয়ায় লকডাউনে আবদ্ধ সময়ে প্রবাসীদের সমস্যার নানা খবর প্রচার করেছেন। ঘরবন্দি প্রবাসীদের মাঝে প্রবাসী ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদদের ত্রাণ বিতরণের খবরাখবর প্রকাশ করে তাঁদেরকে উৎসাহিত করেছেন মানবসেবায়।
কুমিল্লার ছেলে আবদুল কাদের সাংবাদিকতার পাশাপাশি জীবিকার তাগিদে কাজ করেন মালয়েশিয়ার গাড়ি তৈরির কোম্পানি 'প্রোডোয়া'য়। সেখানেও কর্মে একনিষ্ঠ তিনি। যেভাবে তাঁকে বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রায় সব অনুষ্ঠানে দেখা যায় তাতে বোঝা মুশকিল তিনি সাংবাদিকতার পাশাপাশি জীবিকার জন্য আরো একটি চাকরি করেন। পরিশ্রম করেনও বটে। সম্প্রতি তিনি দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেস ক্লাব-মালয়েশিয়া'র সাধারণ সম্পাদকের। এর আগে তিনি যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন প্রেস ক্লাবের। তিনি বুকে ধারণ করেন লাল-সবুজের বাংলাদেশকে। ভালোবাসেন প্রবাসীদের নিয়ে কাজ করতে।
২১ নভেম্বর মোহাম্মদ আবদুল কাদেরের জন্মদিন। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের পক্ষ থেকে তাঁকে জানাই জন্মদিনের অফুরন্ত শুভেচ্ছা। শুভ জন্মদিন মোহাম্মদ আবদুল কাদের। মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য আপনার তথ্যসেবা প্রচেষ্টায় উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি আসুক। আপনাদের হাত ধরে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটিতে গড়ে উঠুক বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চর্চা। সমৃদ্ধ-উন্নত বাংলাদেশ গড়ার পথে থাকা দেশের জন্য রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের অবদান ও গুরুত্ব অপরিসীম।
প্রবাসীদের দেশপ্রেম ও শেকড়ের সাথে আত্মার সম্পর্ক চিরজীবী হোক। রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় সেবা প্রাপ্তিতে আবদুল কাদেরের মতো প্রবাসী সাংবাদিকদের দৃষ্টি সদা সজাগ থাকুক।
লেখক ও সাংবাদিক ,মালয়েশিয়া প্রবাসী