এনটিভির ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নাটকটি প্রবাসীদের মন জয় করেছে
ফ্যামিলি ক্রাইসিস শুধু নাটক নয় একটি পরিবারের বাস্তব জীবনের দৃশ্যপট, বিশেষ করে প্রবাসীদের মধ্যে অল্প সময়ে জায়গা করে নিয়েছে এনটিভিতে প্রচারিত এই ধারাবাহিক নাটকটি।
ফ্যামিলি ক্রাইসিস ধারাবাহিক নাটকটি মত এমন নাটক হবে বহুদিন বাংলাদেশের মানুষের স্বপ্ন ছিল।যদি বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের বেশিভাগ পরিবার ভাল মানের গল্প না থাকার কারণে বাংলা নাটক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল অধিকাংশ মানুষ। ফলে ভারতীয় স্টার জলসা কিংবা স্টার প্লাসের মত বিভিন্ন চ্যানেলে আসক্ত ছিল অনেক পরিবার।
সেই ধারাবাহিকতা অনেকটা পাল্টে দিয়েছে ফ্যামিলি ক্রাইসিস' নাটকটি সেইসব পরিবারের মাঝে। একটি নাটকে বাস্তব জীবনে এমন সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব সেটি না দেখলে বিশ্বাসযোগ্য মনে হবে না।
বিশেষ করে প্রবাসীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে এই ধারাবাহিক নাটকটি। বেশিরভাগ প্রবাসী কর্মব্যস্ত দিন শেষে ঘুমানোর শেষ মুহূর্তে এই নাটকটি দেখেনি এমন লোক কম পাওয়া যাবে। কি পরিমান আস্থা অর্জন করলে এতটুকু জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে সেটি প্রমাণ করে দিয়েছে এনটিভিতে প্রচারিত ফ্যামিলি ক্রাইসিস' নাটকটি।
তাছাড়া পরিবারের সবাইকে নিয়ে একসাথে দেখার মতো নাটক ঠিক যেমন আগের দিনের নাটকগুলো ছিলো।এ নাটকের প্রত্যেকটি চরিত্র যেনো বাস্তব চরিত্র ।এ নাটকটি মনে দাগ কাটেনা এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া বিরল । আমাদের দেশের শতকরা ৮০ থেকে ৮৫ ভাগ পরিবারের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে । মাঝে মাঝে নাটকটি চরম মাত্রায় ইমোশনাল করে ফেলে ।
রায়হান ও রুমার অভিনয় প্রথমে ভালো না লাগলেও এই নাটকে দারুন করেছে। শেষ মুহূর্তে আর শেফালী খালা সাদা মনের মানুষের বাস্তব রুপ আর শহীদুজ্জামান সেলিম ভাই তো জাদরেল অভিনেতা আর তার বউ এর চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন আমি তো রীতিমতো মুগ্ধ । গরীবের বউ সবার ভাবী কথাটা যেনো তার ক্ষেত্রে শতভাগ সত্যি । ঝুমুর তো এক কথায় অসাধারণ অভিনয় করেছে কথায় কথায় থাপ্পর খাওয়া অনেকটাই অভ্যাসে পরিণত হয়েছিল। শর্মিলী আহমেদের তো তুলনায় নেই । আর মোজাম্মেলের কথা তো বলে শেষ হবেনা আর বাড়িওয়ালা মামা তো অতুলনীয় ।
আর দোকানদারের ছ্যাচরামীটা বেশী দেখিয়ে ফেলেছে আর পারভেজের জোকারিটা মাঝে মাঝে বিরক্তির কারন হলেও মারাত্মক অভিনয় করেছে । এক একটি পর্বের জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকি কখন আসবে নাটকটি এনটিভিতে প্রতি সপ্তাহের মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে প্রচারিত হয়।যদিও তারচেয়ে ভাল সাড়া ফেলেছে ইউটিউব চ্যানেলে নাটকটি।
বিশেষ করে প্রতিটি গল্প সময়ের সাথে মিলে যায় পারভেজ যেমন প্রথম দিকে নাটকটিতে বাড়তি আকর্ষণ দিলেও কিন্তু পারভেজ উধাও হওয়ার পর সেই জায়গাটি করে নিল মোজাম্মেল।আর সবার অভিনয়ের পাশাপাশি ঝুমুরের অভিনয় আমার কাছে অনেকটাই ভালো লেগেছে।কেন জানি ঝুমুরের সাথে একটা চরিত্র মিল পাওয়া যায়।যদিও প্রতিটি চরিত্র অসাধারণ ভাবে উপস্থাপনা করেছে নাটকটির পরিচালক মোস্তফা কামাল রাজ।
এখনতো ফ্যামেলি ক্রাইসিস নাটকে দুই পরিবারের আনন্দের শেষ নেই কারণ ঝুমুর ও রায়হানের বিয়ে হয়ে গেছে করোনা কালিন সময়ে সীমিত পরিসরে। গায়ে হলুদে নাচের তালে গানের সুরে অনেকটা বাড়তি আনন্দ দিয়েছে মোজাম্মেল।
তাছাড়া করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত মাসে হাসপাতালে ছিলেন ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ ধারাবাহিকের পরিচালক মোস্তফা কামাল রাজ। সেখানকার চিকিৎসক ও নার্সরাও তাঁকে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস ভাই’ নামে সম্বোধন করেছেন। তারপরও নাটকটি এনটিভিতে সময়ে মত প্রচারিত করতে সুটিং করে যাচ্ছেন তিনি।
এতো সুন্দর ধারাবাহিক নাটক উপহার দেওয়ার জন্য পরিচালক সংশ্লিষ্ট ও ক্যামেরার পেছনে যারা কাজ করেছে সবাইকে অনেক ধন্যবাদ জানাই । বাংলাদেশের নাটক যে এখনো জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারে এই নাটকটি উদাহরণ হয়ে থাকবে।