মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেসক্লাবে’র বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ
মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া সাংবাদিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেসক্লাব মালয়েশিয়া’র (বিসিপিএম) বার্ষিক আনন্দ ভ্রমণ-২০২২ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় সময় রোববার (১৩ মার্চ) মালয়েশিয়ার বৃহত্তম বন্দর সেলাঙ্গর রাজ্যের পোর্ট ক্লাং শহরের পুলাউ কিতাম দ্বীপে ভ্রমণ করেন বিসিপিএম’র সদস্যরা।
বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেসক্লাব মালয়েশিয়ার সভাপতি ও আরটিভি মালয়েশিয়া প্রতিনিধি মোস্তফা ইমরান রাজু এবং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ও সময় টিভির মালয়েশিয়া প্রতিনিধি মোহাম্মদ আবদুল কাদের’র নেতৃত্বে এই আনন্দ ভ্রমণে সংগঠনের আটজন সদস্য সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
প্রবাসের নানা খবরের পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত মনকে একটু প্রশান্তি দিতে পুলাউ কিতাম দ্বীপের প্রকৃতি দেখতে অঞ্চলটির বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করেন কমিউনিটি প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা।
জালান সিয়াহবন্দরের পেনুম্পাং দক্ষিণ টার্মিনাল থেকে স্পিড বোটে আসা যাওয়ার আকাঁ বাঁকা পথে দু’পাশে ম্যানগ্রোভ বন আর বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণী ও পাখির সরব উপস্থিতি, স্পিডের বোটের গায়ে পানির ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, ইঞ্জিনের ধুক ধুক আওয়াজ, বিস্তৃত সবুজ আকাশ আর মুক্ত বাতাস সেই সঙ্গে ছোট বড় ঢেউ খেলে যাওয়া এ এমনই এক মোহময় আবেশ সৃষ্টি করেছে যা দারুণ সুখের অনুভূতি।
পোর্ট ক্লাং শহরের পুলাউ কিতাম দ্বীপটি কুয়ালালামপুর থেকে ৩৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। এটি সমুদ্রপথে মালয়েশিয়ার প্রধান প্রবেশদ্বার। ১৯৭২ সালে পোর্ট ক্লাং নামকরণ হওয়ার পর ১৮৮০ সালে প্রধানত তেওচেউ এবং হোকলো (হোককিন) চীনা জেলেদের দ্বারা পুলাউ কিতাম দ্বীপে বসতি স্থাপন করা শুরু হয়। পুলাউ কিতাম দ্বীপটি ক্র্যাব দ্বীপ অথবা কাঁকড়া দ্বীপ নামেও পরিচিত।
স্থানীয় এক বাসিন্দা সময় সংবাদের প্রতিবেদককে জানায়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই দ্বীপে জনসংখ্যা বৃদ্ধির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিল কারণ তাইওয়ান থেকে যখন জাপানিরা চীনাদের আক্রমণ করে তখন তাঁরা পালিয়ে এসে পুলাউ কিতামে অবস্থান করে এবং সেখানেই বসতি স্থাপন করে। ভাসমান দ্বীপের সবগুলো ভবন স্টিল, কাঠ ও সিমেন্টের তৈরি পিলারের ওপর স্থাপন করা হয়েছে যা পানির পৃষ্ঠ থেকে ১০ মিটার নিচে পর্যন্ত প্রসারিত। রাস্তাগুলি, সাধারণ পাকা রাস্তার মতো প্রদর্শিত হলেও স্টিল, কাঠ ও সিমেন্টের তৈরি।
মূল শহরের বাইরেও রয়েছে বেশ কয়েকটি কাঠের সেতু। দ্বীপটিতে কোনও যানবাহন নেই। শুধুমাত্র ব্যাটারি চালিত বাইকে অথবা পায়ে হেঁটে চলতে হয় বাসিন্দাদের। সেখানে সামুদ্রিক খাবারের জন্য রয়েছে চীনাদের বেশ কয়েকটি রেস্তোঁরা যেখানে স্বাদ নিতে পারেন সি-ফুড প্ল্যাটার, ট্রাউট, স্যামন ফিশ, গ্রিলড কালামারির, গ্রিলড স্ন্যাপার ফিশের। সি-ফুড প্ল্যাটারে ক্র্যাব, স্কুইড, প্রন, স্যামন সব কিছুর স্বাদ পাবেন।
এছাড়া দ্বীপের বিভিন্ন পয়েন্টে কিছু চিহ্ন রয়েছে যা দর্শনার্থীদের ময়লা না ফেলার কথা মনে করিয়ে দেয়। জোয়ারের পানিতে সমুদ্রে প্লাস্টিক বর্জ্য নিচে পড়ে সমুদ্রের জীববৈচিত্র যেন বিপন্ন না হয় সেজন্য রয়েছে সতর্কতা।
আনন্দ ভ্রমণে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ কমিউনিটি প্রেসক্লাব মালয়েশিয়ার সিনিয়র সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম রতন, সহসভাপতি ও এনটিভির মালয়েশিয়া প্রতিনিধি কায়সার হামিদ হান্নান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওআইসিটুডের হেড অব মিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ সাঈদ হক, দপ্তর সম্পাদক সিএনআই প্রতিনিধি শাহাবুদ্দিন আহমেদ, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ও এনটিভি মালয়েশিয়ার নিউজরুম এডিটর আবু সুফিয়ান, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ইউনিভার্সিটি মালায়ার পিএইচডি শিক্ষার্থী জিনাত তাবাসসুম প্রমুখ অংশগ্রহণ করেন।