মালয়েশিয়ায় ‘মাইশা গ্রুপ অব কোম্পানির’ উদ্যোগে আনন্দ ভ্রমণ
মালয়েশিয়ায় মাইশা কনস্ট্রাকশন কর্মীদের প্রজেক্ট শেষ হওয়ায় ‘মাইশা গ্রুপ অব কোম্পনির’ উদ্যোগে গত শনি ও রবিবার দুই দিনব্যাপী মাইশা ট্রাভেল এন্ড ট্যুরসের পরিচালনায় আনন্দ ভ্রমণের আয়োজন করা হয়।
গত শনিবার সকাল ৭টায় কোম্পানিটির জিনজাং, কুয়ালালামপুরের অফিসের সামনে থেকে বাস যোগে যাত্রা শুরু করে বুকিত পারমাতা হয়ে লুমুট জেটি থেকে ফেরিতে ২০ মিনিট পরেই তেলুক নিপা বীচের পাংকোর আইল্যান্ডে গিয়ে থামে। পরে ৫টি মিনি বাসে করে সাড়ে ১২টায় হোটেলে পৌঁছালে, হোটেল কর্মীদের অভ্যর্থনায় শুরু হয় মূল ভ্রমণ।
হাফেজ মাওলানা জাফর হোসাইনীর কুরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত এ আনন্দ ভ্রমণ অনুষ্ঠানে কর্মীদের উদ্দেশে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন কোম্পানিটির চিফ এক্সেকিউটিভ অফিসার মিন্টু এমডি ইসহাক ও কোম্পানির ম্যানেজার ফজলে সজল।
দুপুরের খাবারের পর বিশ্রামের রেশ কাটতে না কাটতেই আইল্যান্ডের বিচে প্রি-মহড়া দেওয়া হয়। সেখানেই যেন ট্যুরের অর্ধেক স্বার্থকতাই সম্পন্ন হয়।
সকালে মূল পর্বে ৩টি মিনি বোটে ট্যুরিস্টদের নেওয়া হয় ৪টি আইল্যান্ডে। এক একটা আইল্যান্ড যেন কোমল নিঃশ্বাসের ইনহেলার। ছবি তোলা, ভিডিও করার মধ্যে নাচ-গান ও কবিতা আবৃতি এবং পঙ্কর আইল্যান্ড হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত এক প্রাকৃতিক কেন্দ্রবিন্দু।
আইল্যান্ডের পানির মধ্যেই আয়োজন করা হয় ফুটবল খেলার। ফুটবল খেলায় মাইশা আর্জেন্টিনা ও মাইশা ব্রাজিল গ্রুপে বিভক্ত হয়ে খেলা শুরু হয়। খেলার প্রথমার্ধে মাইশা ব্রাজিল এক গোল খেলেও আজমীর, রাসেল, সাইফুল ও হারুনের নৈপুণ্যে মাইশা ব্রাজিল জয়লাভ করে।
আইল্যান্ডের নিপা বিচে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি হতে থাকায় দুপুর ২টায় ফিরতে হয় কূলে। এরপর গোসল সেরে ফেরার পথে নিয়ে যাওয়া হয় বাড়তি নলেজ যোগ করার জন্য বিশেষ মসজিদ ভ্রমণের। আইল্যান্ডের পানির ওপরের মসজিদ আল বদর মালয়েশিয়াকে করেছে সত্যি মনোমুগ্ধকর। অনেকেই মসজিদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করে যেন বিশেষ তৃপ্তি পেয়ে বসেন।
ফিরতি বাসের দুলুনির মধ্যেই যখন সোঁৱৰ মধ্যে ঘুম ঘুম ভাব তখন মাইশা ট্রাভেলসের ব্র্যান্ড ডেভেলপার মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম আচমকা ঘোষণা করেন, মালয়েশিয়া এবং বাংলাদেশ সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতার। এ প্রতিযোগিতায় প্রত্যেককে একটি করে প্রশ্নের কাগজ উঠাতে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে তার উত্তর দেওয়ার আহ্বান করা হলে সবার মধ্যে থেকে ২৮ জন সঠিক উত্তর দিতে স্বক্ষম হলে লটারির মধ্যে থেকে ৩ জনকে বেছে নেওয়া হয় পুরস্কারের জন্য। এদের মধ্যে প্রথম পুরস্কার লাভ করেন মহা. মুজিবুর রহমান, দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন মো. ফারুক হোসেন, এবং তৃতীয় পুরস্কার লাভ করেন হাফেজ মাওলানা জাফর হোসাইনী।
কর্মীদের মধ্যে কোম্পানির রিফ্রেশমেন্টের এ আনন্দ ভ্রমণ সম্পর্কে মতামত প্রদান করেন, কোম্পানিটির সুপারভাইজার, সাইফুল, হারুন এবং আজমীর হোসেন, তারা তাদের কোম্পানিকে অন্য কোম্পানির মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরে বলেন, ‘প্রজেক্ট শেষে আমাদের মত কর্মীদের জন্য এমন আনন্দ ভ্রমণের ব্যবস্থা সত্যি এক আনন্দের। আমাদের সামনে যেখানে অনেক কর্মীর কাজ মিলছে না আবার কাজ করেও মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছে না, সেখানে আমরা বেতন বোনাস পাবার পরও পাচ্ছি বসের সঙ্গে ঘোরার আনন্দ।’
কোম্পনিটির লোকাল ইঞ্জিনিয়ার, মুহাম্মদ মোহাইমিন বলে, ‘ইনি কোম্পানি বাগুস, চানতে। তেরিমা কাছি মাইশা। অর্থাৎ এ কোম্পানী ভালো, অনেক সুন্দর। ধন্যবাদ মাইশা কোম্পানি।’
ছবি তোলা, ভিডিও করার মধ্যে নাচ-গান ও কবিতা আবৃতি এবং পঙ্কর আইল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনে কখন যে সময় পার হয়ে যায় তা কেউ বুঝে উঠতে পারিনি।
বাসের মধ্যেই সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ফুটবল ও সাধারণ জ্ঞান কুইজ পর্বে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ফজলে সজল। তাদের তিন জনকে পুরস্কৃত করেন। সর্বশেষ কোম্পানিটির কর্ণধর, মিন্টু এমডি ইসহাকের বিশেষ আহ্ববানে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় রিফ্রেশমেন্টের আনন্দ ভ্রমণ।