করোনা মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহবান

বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাস আজ মানুষের জীবন মহাসংকটে ফেলে দিয়েছে। করোনার ছোবল থেকে পৃথিবীর কোনো দেশই আর মুক্ত নয়। যেখানে উন্নত দেশগুলো করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। দেশে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবে এক মহাসংকটের সৃষ্ট করেছে।তাই আর বসে থাকা নয় সরকার, হাইকমিশন, কমিউনিটি ব্যাক্তিত্ব, ব্যাবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।
করোনা ভাইরাস প্যান্ডেমিক পরিস্থিতি ও মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ আদেশ (মুভমেন্ট কন্ট্রোল অর্ডার বা এমসিও) লকডাউন এর কারনে মালয়েশিয়ার সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য এক দুর্বিষহ জীবন শুরু হয়েছে।
অনেক প্রবাসী শ্রমিক ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন।অনেক মিল ইন্ড্রাস্ট্রিজ, কনস্ট্রাকশন গুলি ,বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। পার্টটাইম কাজ করা ছাত্রদের কাজ বন্ধ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল মালয়েশিয়া সরকার মালিকদের বেতন দিয়ে দেয়ার ঘোষনা দেয়ার পরও কিছু কিছু মালিক বেতন দিচ্ছে না। এমতাবস্হায় আগামী দিনগুলিতে প্রবাসী শ্রমিকরা আরো ভয়াবহ অবস্হার সম্মুখীন হবেন।
ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়া সরকারের এক দায়িত্ব প্রাপ্ত মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলনে বাংলাদেশী শ্রমিকদের খাদ্য সহযোগিতার জন্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনকে উদ্যেগ নেয়ার উপদেশ দিয়েছেন এবং মালয়েশিয়া সরকার সহযোগিতার মনোভাব প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ কমিউনিটির কিছু কিছু ব্যাক্তিত্ব স্ব উদ্যোগে কিছু কিছু জায়গায় খাদ্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্ত লকডাউন এর কারনে ও একক ভাবে এই বিশাল সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়।
তাই মালয়েশিয়ায় অবস্হানরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদের আহ্বান করব করোনা ভাইরাসের কারনে সৃষ্ট সমস্যা গুলি থেকে প্রবাসী বাংলাদেশীদের রক্ষার জন্য আসুন সবাই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই।
এই ব্যাপারে আমার মতামত নিম্মে তুলে ধরলাম -
১। দল মত নির্বিশেষে কমিউনিটির সকল নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিদের সাথে হাইকমিশনের উদ্যোগে মত বিনিময় করা ।
২। সকল ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের ডাটা কালেকশন করা।
৩।পরিস্হতি অনুযায়ী জরুরি, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করা ।
৪। শ্রমিকদের প্রাপ্য ও বকেয়া বেতন আাদায় করে দেয়ার ব্যবস্থা করা।
৫। হাইকমিশনের ওয়ার্কার ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে শ্রমিকদের সাহায্য করা।
৬। বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সাহায্য নেয়া।
৭। স্হানীয় বাংলাদেশী ব্যাবসায়ী ও প্রফেশনালদের নিকট আর্থিক সাহায্য প্রার্থনা ও একটা সেন্ট্রাল মনিটরিং সেল গঠন করা ।
৮।মালয়েশিয়া সরকারের সাথে সহযোগিতা বিষয়ক মতামত ও সাহায্য প্রার্থনা করা ।
এ সংক্রান্ত সংবাদ ও তথ্য আদান প্রদানের জন্য সোস্যাল মিডিয়া ও গনমাধ্যমের স্হানীয় প্রতিনিধিদের সাহায্য নেয়া জরুরী।
সকল রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্ব, স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন, সকল জেলা সমিতি, ব্যাবসায়ী সমিতি, এনজিও, সকল এসোসিয়েশন, প্রফেশনাল শিক্ষক ও বাংলাদেশী মসজিদ ভিত্তিক গড়ে উঠা কমিউনিটির সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে।
আমি মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হাইকমিশনকে এ ব্যাপারে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে দলীয় সংকীণতা , দলীয় ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে দলমত নির্বিশেষে সকলকে মানবতার ডাকে সাড়া দেয়ার আহবান জানাচ্ছি ।মালয়েশিয়ার সকল প্রবাসী এই মহত কাজে সহযোগী হব এই প্রতিশ্রুতি দিতে পারি।
আর কাল ক্ষেপন না করে সকলকেই যার যার অবস্হান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান করছি। সবাই ভাল থাকবেন, নিরাপদ থাকবেন, ঘরে থাকবেন নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখবেন।মালয়েশিয়া সরকারের বেধে দেয়া আইন মেনে চলবেন।
লেখক -
প্রকৌশলী বাদলুর রহমান খান।
ব্যাবসায়ী ,সমাজসেবক ,রাজনীতিবিদ ,মালয়েশিয়া