ঈগলের দ্বীপ 'লাংকাবি' (ভিডিও)
![](https://malaysia.ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2020/06/07/01_0.jpg?itok=hjbGGtTe×tamp=1591543530)
মালয়েশিয়ায় দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম ঈগলের দ্বীপ খ্যাত 'লাংকাবি'। রাজধানী কুয়ালালামপুর থেকে প্রায় সাড়ে পাঁচ'শ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত এই দ্বীপে সারা বছর জুড়ে থাকে পর্যটকদের ভীড়।
কেডাহ্ প্রদেশের সম্পদ এই দ্বীপটি মুলত ঈগলে'র জন্য বিখ্যাত। পুরো দ্বীপ জুড়ে আপনার চোখে পড়বে উড়ন্ত ঈগল। পোর্ট দিয়ে শহরের প্রবেশমুখে-ই নির্মান করা হয়েছে বিশাল আকৃতির ঈগল মুর্তি যা ঈগল স্কয়ার নামে পরিচিত।
লাংকাবি'র আনাচে কানাচে-ই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ফুলঝুরি। প্রকৃতি যেনো নিজ হাতে সাঁজিয়েছেন তার প্রিয়তমা'কে। প্রাকৃতির সৌন্দর্যের সঙ্গে দর্শনার্থীদের বাড়তি আকর্ষন দিতে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কিছু প্রকল্প যার অন্যতম একটি কেবল কার ও স্কাই ব্রিজ। পৃথিবীর সেরা দশটি স্কাইব্রিজে'র একটি লাংকাবি স্কাই ব্রিজ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,১৭০ ফুট উচুতে নির্মিত এই কার্ব আকৃতির ব্রিজটি'র দৈর্ঘ ১'শ ২৫ মিটার। কেবল কার এ চড়ে উপরে উঠে লিফট কিংবা হেঁটে এই ব্রিজে যেতে পারেন দর্শনার্থীরা। কেবল কার দিয়ে উপরে ওঠার সময় দুটি স্পটে নেমে মেঘের মাঝে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সুযোগ রয়েছে। দারুন এ সুযোগে দর্শনার্থীরা উপভোগ করতে পারেন আকাশ, পাহাড় আর সমুদ্রের চমৎকার মিলনমেলা। মেঘের মাঁঝে দাঁড়িয়ে, সবুজ পাহাড়ের ফাঁক দিয়ে নীল জলরাশির মনমুগ্ধকর এ দৃশ্য পৃথিবীর আর কোথাও মিলবে কি না আমার জানা নেই।
স্কাইব্রিজ ও কেবল কার এর নিচে গড়ে তোলা হয়েছে ওরিয়েন্টাল ভিলেজ যেখানে থ্রিডি আর্ট গ্যালারি থেকে শুরু করে দর্শনীয় অনেক কিছুই রয়েছে।
লাংকাবিতে ঘুরে দেখার জন্য রয়েছে শতাধিক দর্শনীয় স্থান।
আন্দামান সমুদ্রবর্তী দ্বীপটি'র সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর সৈকত পান্তাই ছেনাং। পর্যটকরা সাধারণত এখানেই বেশিরভাগ সময় কাটান। এই সৈকত'কে ঘিরে গড়ে উঠেছে শত শত হোটেল ও মোটেল।
তবে 'কহোনা পেয়ার হে' গানের একটি অংশের স্যুটিং হওয়া তানজুং রুহ বীচ ও ব্লাক স্যান্ডি বীচ বা কালো বালির দ্বীপ পর্যটকদের বাড়তি সৌন্দর্য উপভোগের সুযোগ তৈরি করে দেয়।
লাংবি'র কম খরচে বেশি উপভোগে'র দারুন সুযোগ রয়েছে হপিং আইল্যান্ড ট্যুরে যেখানে চার ঘন্টায় চারটা ভিন্ন ভিন্ন দ্বীপ দেখা যাবে, দেখা যাবে সমুদ্রের মাঝে ঝাঁকে, ঝাঁকে ঈগলদের খাওয়ানোর দৃশ্য।
দর্শনীয় স্থান:
ঈগল স্কয়ার, কেবল কার ও স্কাই ব্রিজ, পান্তাই ছেনাং বীচ, তানজুং রুহ বীচ, ব্লাক স্যান্ডি বীচ ছাড়াও রয়েছে আন্ডার ওয়াটার ওয়ার্ল্ড, ওরিয়েন্টাল ভিলেজ, ক্রোকোডাইল ফার্ম, বার্ড প্যারাডাইজ, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, বে রিসোর্ট, সেভেন ওয়েলস ওয়াটারফলসহ শতাধিক দর্শনীয় স্থান।
এছাড়া লাংবাবি'তে ছোট, বড় শীপে করে সমুদ্রের মাঝে সূর্যাস্ত দেখা, অন্য কোন দ্বীপে গিয়ে মাছ ধরা, গভীর সমুদ্রে কোরাল দেখাসহ নানা অভিজ্ঞতা অর্জনের দারুর সুযোগ রয়েছে।
কিভাবে যাবেন:
লাংবিতে বিমানে যাওয়া'ই ভালো। কুয়ালালামপুর কিংবা সুবাং বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৩৫ কিংবা ৪০ মিনিটে লাংকাবি পৌঁছানো যায়। তবে যারা সময় নিয়ে ঘুরতে আসেন তারা বাসে করে যেতে পারেন। কুয়ালালামপুরের টিবিএস (বান্দার তাসিক সেলাতান) থেকে বাসে কলা পেরলিস তার তারপর ফেরিতে লাংকাবি'র কুয়া ফেরি ঘাটে পৌঁছে যেতে পারেন নির্ধারিত হোটেলে।
সময় আর অর্থ দুটোই বেশি থাকলে লাংকাবি ভ্রমনটা আপনার কাছে সেরা ভ্রমনের একটি হয়ে থাকবে। অবসর কাটাতে যারা সবকিছু ছেড়ে শুধু প্রকৃতির মাঝে কিছুটা ভালোলাগার সময় কাটাতে চান তাদের জন্য ঈগলের দ্বীপ খ্যাত লাংকাবি-ই উপযুক্ত স্থান।
লেখক - মোস্তফা ইমরান রাজু ,আরটিভি ,মালয়েশিয়া প্রতিনিধি