বিদেশিদের জন্য ১৫ নভেম্বর থেকে মালয়েশিয়ার পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেয়ার ঘোষণা
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সব বিদেশি পর্যটকের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে লংকাউই দ্বীপমালার পর্যটন কেন্দ্র। দেশটিতে করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে দেশটির অর্থনীতির চাকা সচল করতে ১৫ নভেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে লংকাউই দ্বীপমালার সব পর্যটন খাত পরীক্ষামূলকভাবে ৩ মাসের জন্য বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল সাবরি ইয়াকোব এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রবেশের অনুমতিপ্রাপ্ত দেশগুলির তালিকা খুব শিগগিরই অভিবাসন বিভাগ, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি তালিকা প্রকাশ করবেন।
করোনার ২য় ডোজ গ্রহণকারী পর্যটকদের কোনো ধরনের কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে এবং বিদেশি পর্যটকরা তিনদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আরটি-পিসিআর টেস্ট করতে হবে এবং ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের অবশ্যই পিতামাতা বা অভিভাবক যারা সম্পূর্ণটিকা গ্রহণ করেছেন তাদের সাথে আসতে হবে।
একই সাথে ৭২ ঘন্টার কোভিড-১৯ পিসিআর টেস্ট সার্টিফিকেটসহ চিকিৎসা বীমা থাকতে হবে এবং হোটেল কোয়ারেন্টাইনের জন্য অগ্রিম অর্থ প্রদান করতে হবে।এর আগে দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক ৯০ শতাংশ মানুষ করোনার দুই ডোজ টিকা প্রদানকারীদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিলো দেশটির আন্তঃরাজ্য ভ্রমণ।
পাশাপাশি মালয়েশিয়া আন্দামান সাগরে ১০৪টি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে গঠিত লংকাউই দ্বীপমালা স্থানীয় পর্যটকদের জন্য খুলে দেয়া হয়েছিলো। ইতিমধ্যেই দেশটির পর্যটন স্পটগুলোতে সংস্কারের কাজ প্রায় শেষের দিকে। এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মত মালয়েশিয়াও অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে। ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছিল পর্যটন শিল্পসহ সবধরনের ব্যবসা বাণিজ্য।
গত দুই বছরে মালয়েশিয়ায় পর্যটক একেবারে তলানিতে নেমেছে। ফলে এই সংকট নিরসনে দেশটির পর্যটন খাত খুলে দেয়ার ঘোষণা আসে।মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড সূত্রে জানা যায় করোনা মহামারির কারণে গত বছরের জানুয়ারি থেকে মালয়েশিয়ায় পর্যটকের সংখ্যা ৯০ দশমিক ৬৮ শতাংশ কমে গেছে। ২০১৯ সালে যেখানে পর্যটকের সংখ্যা ছিল ২ কোটির বেশি।
মালয়েশিয়া ট্যুরিজম প্রোমোশন বোর্ড বলছে, মহামারির কারণে পর্যটন খাতে আয় কমেছে প্রায় ৮১ শতাংশ। ২০১৯ সালে পর্যটন খাতে আয় ছিল ৬৬ দশমিক ১ বিলিয়ন রিঙ্গিত। ২০১৯ সালে পর্যটন খাত থেকে আয় হয়েছিল ২৪ হাজার ২ কোটি রিঙ্গিত, যা দেশটির জিডিপি’র ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ।কিন্তু করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে গত বছরের মার্চে শুরু হওয়া লকডাউনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মালয়েশিয়ার পর্যটন খাতেও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পাশাপাশি দেশটির অর্থনীতি তলানিতে পৌঁছে। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্য সরকার বিভিন্ন ধাপে ধাপে নানামুখী পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। আশা করা যাচ্ছে সরকারের এসব বাস্তবমুখী পরিকল্পনায় আগামী বছরের শুরু থেকে এশিয়ার ইউরোপ খ্যাত এই মালয়েশিয়া তার চিরচেনা রূপ ফিরে পাবে।
ভেকসিন দেয়ার পর থেকে থেকে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যের হার উল্লেখযোগ্য হারে কমছে। সরকারও সর্বসাধারণকে ভ্যাকসিন গণহারে প্রদান করে ইতিমধ্যে দেশটির প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ৯৪ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ ২য় ডোজের টিকা নেয়া সম্পন্ন করেছেন।